শুক্রবার, ৩১ আগস্ট, ২০১২

গাধা একশো বছর বাঁচলেও সিংহ হয় না..

রাশেদুন্নবী সবুজ

মসজিদ ভাঙে ধার্মিকেরা, মন্দিরও ভাঙে ধার্মিকেরা,
তারপরও তারা দাবি করে তারা ধার্মিক,
আর যারা ভাঙাভাঙিতে নেই তারা অধার্মিক বা নাস্তিক..


শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি এই মূলনীতিগুলো সামনে রেখে সোনার ছেলে প্রস্তুতকারক আব্বার কারখানায় যে সংগঠনি উৎপাদিত; তা আজ ফুলেফেঁপে পচনের পাড়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের নানাবিধ ন্যাক্কারজনক কর্মকা-ের বর্ণনা করা সম্ভব নয়, এবং তার প্রয়োজনও নেই.. ছাত্র মাত্রই সেই সব মহান সন্তান কর্তৃক ভুক্তোভোগী। তবে দেশের সবচেয়ে শান্ত, নিরীহ, নির্ভেজাল মানুষের আবাসস্থল কুড়িগ্রাম (বাঙলাদেশে বসবাসকারি অনেকেই এ জেলাটির নাম পর্যন্ত জানেন না) জেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনাটির দিকে নজর না দিলেই নয়। অনেকে বলতে পারেন এমন কি আবার ঘটালো? ওরাতো সিলেটের গোটা ঐতিহ্যকেই ধর্ষণ করে দিয়েছে.. যারা এমন ভাবছেন তারা এটুকুন মাথায় রাখবেন; শান্তিপ্রিয় কেউই প্রতিবাদী হতে পারে না; কিন্তু একবার বেকে বসলে সবকিছুতেই আগুন লেগে যায়, পুড়ে যায় তাবৎ অহংকার.. তা যে পোড়ালো বা যে পুড়লো উভয়েরই..

বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, ‘বিশ্বের বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ (যার ঢোল সে পেটায়) গত ২৩ ও ২৪ জুলাই কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার ফরম পূরণে বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবীতে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচিতে ২০-২৫ জনের একটি লাঠিয়াল বাহিনী বাঁধা দিয়ে কলেজ ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য কোনো সংগঠন কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারবে না এবং কলেজে পড়তে হলে তাদের হুকুম মেনে পড়তে হবে বিবেচনায় হামলা চালিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সম্পাদক সাম্য রাইয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক নিরঞ্জন, ছাত্রফ্রন্টের সরকারি কলেজ শাখার নেত্রী মৌসুমী, কামরুন্নাহার, আতিকুর, রঞ্জিৎ, স্বপনসহ প্রায় ১০ জনকে আহত করে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবী, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের বিষয়গুলোর জন্য ২৮৫০ টাকা, বিজ্ঞান বিভাগে ৩৩৭৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় বেশি। বরাবরের মতো বিদ্যাচর্চার পরিবর্তে পকেটচর্চাকারী কলেজ শিক্ষকের (সকলেই নন) বয়ান সরকারি কুতুর কুতুরদের পক্ষেই গেছে। শহরে হামলার পরবর্তী সময়গুলোতে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি, সম্পাদক এক বিবৃতিতে এ হামলার তীব্র নিন্দা ও হামলাকারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানান।

বাঙলার দোস্ত আমাদের জাতীয় আব্বা পরিবারের প্রায় সকলের সাথে আততায়ীর গুলিতে ঝাঁঝড়া হবার পর ডোবার জলে কলমি ডাল নাকে লাগিয়ে ডুবে থাকা ছাত্রলীগের ইতিহাসে পঁচন ধরতে শুরু করে। জিয়া ক্ষমতা দখলের পর দেশের ছাত্র রাজনীতিতে যে ঘুর্ণীঝড় বয়ে যায় তাতে ছাত্রলীগ পড়েছে মাঝবরাবর। জামাতে ইসলামীর ইসলামী ছাত্রশিবির সে সময় রগ কাটা, খুনসহ সন্ত্রাসী কর্মকা- শুরু করে। কিন্তু ছাত্রলীগই ছাত্র রাজনীতিতে অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি, লাইসেন্সবাজি, হল দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ধর্ষণ শুরু করে সামরিক শাসনের পাছা টিপতে টিপতে ঢুকে গেলো সে নয়া জগতে। সেই সাথে ছাত্রশিবির, ছাত্রদলকে পেছনে ফেলে দেশজুড়েই এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে সক্ষম হয়.. আহা.. কি মজা..

আদুভাই, অস্ত্রবাজ, টেন্ডারবাজ, হল দখলকারী, সন্ত্রাসী, শতকীধর্ষক কর্তৃক প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হচ্ছে ‘বিশ্বের বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’

বিগত বছরগুলোতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা খুন করেছে ২০ জন মেধাবী ছাত্রকে, বন্ধ করে দিতে হয়েছে অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর ভাইয়ে ভাইয়ে মোলাকাতে খুন হয়েছে ডজন খানেক। যার কোনোটিরই বিচার করতে পারে নাই স্বঘোষিত দেশপ্রেমিক সরকার! সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এমনকি আওয়ামী লীগও এদের ভয়ে ভিত। তারা ঘোষণা দিয়েই বলেছে ‘ছাত্রলীগের কোনো কাজের দায়দায়িত্ব তাদের নয়’।

সকলেরই এটা মনে রাখা দরকার পিতা একজনই.. সে পুত্রকে ত্যাজ্যই করুক আর পুত্রই পিতাকে ত্যাজ্য করুক। তাই বলতেই হয় ‘ব্যর্থরাই প্রকৃত মানুষ, সফলেরা শয়তান’..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন